পরিবেশ ও স্বাস্থ্যহানি ঘটায় বলে প্লাস্টিক বর্জনের আওয়াজ উঠেছে গােটা পৃথিবী জুড়ে। কেনাকাটার সময় জিনিসপত্র দেওয়ার জন্য প্লাস্টিক ব্যাগের যে-চল আছে আমাদের দেশে, তাতেও ক্রমশ পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। প্লাস্টিকের জায়গা নিচ্ছে নন-ওভেন ব্যাগ বা কাগজের থলে। আপনিও এ ধরনের ব্যাগ তৈরি করে বিভিন্ন দোকানে ও সংস্থায় জোগান দিয়ে উপার্জন করতে পারেন। ব্যাগ তৈরির জন্য স্বয়ংক্রিয় মেশিন কিনতে পাওয়া যায়।
পৃথিবী জুড়ে প্লাস্টিকজাত দ্রব্য সুস্থ পরিবেশের অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে। শুধু মানুষ নয়, প্লাস্টিকের জন্য আজ বন্যপ্রাণও বিপদের মুখে। প্লাস্টিক সামগ্রীর মধ্যে সৰচয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ। কাগজ, কাপড় এবং ননওভেন কাপড়ের ব্যাগ প্লাস্টিকের বিকল্প হতে পারে। এর ব্যবহারও ব্যাপক হারে শুরু হয়েছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী এখনও এগুলির উৎপাদন বেশ কম। তাই প্লাস্টিকের ব্যাগকে জীবন থেকে একেবারে বাদ দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে পরিবেশ দূষণও ঘটে চলেছে।
সামনেই শীতকালীন উৎসবের মরশুম। বড়দিন ও নতুন বছর তাে আছেই, আছে হস্তশিল্প মেলা, বইমেলা, বিভি প্রদর্শনী ইত্যাদিও। এ সময় কেনাকাটা বেশি হয়। আর, কেনাকাটা বেশি হওয়া মাত্রই ব্যাগের চাহিদা বাড়বে। এই সময় শুরু করতে পারেন কাগজের ব্যাগ, নন-ওভেন কাপড়ের ব্যাগের ব্যবসা।
বাজারের চাহিদার কথা ভেবে বছর তিনেক হল সাঁতরাগাছির দুই ভাই, সুরজ ঘােষ ও সুরজিৎ ঘােষ বেসরকারি সংস্থার চাকরি ছেড়ে নন-ওভেন ব্যাগ তৈরির ব্যবসা করছেন। তাদের সংস্থার নাম সুরজ এন্টারপ্রাইজ।
ব্যবসা শুরু করার আগে কয়েক মাস তারা বাজার-সমীক্ষা করে দেখেছেন, মার্কেটিংও করেছেন নিজেরাই। ব্যাগের জন্য একসঙ্গে অনেকটা পরিমাণ কাপড় তারা কিনে আনেন বকড়া থেকে। একসঙ্গে বেশি পরিমাণ কাপড় নিলে দামেও কম পড়ে। ছােট, বড় বিভিন্ন আকারের ব্যাগের অর্ডার পেয়ে থাকেন তারা। সংস্থার দুই কর্ণধারই জানালেন, নন-ওভেন ব্যাগের চাহিদা এতটাই বেশি যে, প্রথম লকডাউনের আগে পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করতে হয়েছে তাদের। সুরজ ও সুরজিৎকে সাহায্য করার জন্য একজন কর্মী আছেন। তবে, তিনি মূলত তৈরি ব্যাগ ডেলিভারি দেওয়ার কাজে সাহায্য করেন। কর্মক্ষেত্রকে সুরজ জানান, ব্যাগ তৈরি করে উপার্জনের পাশাপাশি তারা যে পরিবেশ দূষণ প্রতিরােধের কাজে সামিল হতে পেরেছেন, সে কথা ভেবে তাদের ভালাে লাগে।
কী ভাবে কাজ শুরু করবেন?
নন-ওভেন কাপড়ের ব্যাগ তৈরির জন্য পাওয়া যায় সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় মেশিন। এক জনই এই স্বয়ংক্রিয় মেশিনটি চালিয়ে উৎপাদন করতে পারেন। মেশিনে নন-ওভেন কাপড়ের রিল লাগিয়ে দিলে কাপড় কাটা থেকে সেলাই ব্যাগ তৈরির পুরাে কাজটা মেশনিই করে দেয়। এক মিনিটে ৫০-৬০টা ছােট ব্যাগ তৈরি হয়। তবে, মেশিন চলার সময় এক জনকে সামনে থাকতেই হয়, যাতে রােলের মধ্যে কোন কাটা কাপড়ের টুকরাে মেশিনে জড়িয়ে উৎপাদন বন্ধ না হয়ে যায় বা অন্য কোনও বিপত্তি না ঘটে।
প্লাস্টিক ব্যাগের বিকল্প হিসেবে নন-ওভেনের মতাে কাগজের ব্যাগের চাহিদাও ক্রমশ বাড়ছে। কাগজের ব্যাগ তৈরি হয় ব্রাউন পেপার দিয়ে। পাতলা, মােটা বিভিন্ন ধরনের ব্রাউন পেপার বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। তৈরি ব্যাগ বা প্যাকেট কোন কাজে ব্যবহৃত হবে তার উপর নির্ভর করে কোন কোয়ালিটির ব্রাউন পেপার লাগবে। সাধারণত ব্রেড, রােল, প্যাটিস ইত্যাদি খাবার বিক্রি হয় পাতলা ব্রাউন পেপারের প্যাকেট। পােশাকের দোকান বা প্রসারিতে জিনিসপত্র দিতে একটু শক্তপােক্ত ব্যাগ প্রয়োজন। ব্রাউন পেপার ছাড়াও নানা রকম কাগজ রয়েছে যা দিয়ে কাগজের ব্যাগ তৈরি হয়। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের উপকরণের জন্য বিভিন্ন ধরনেরমেশিনের প্রয়ােজন নেই। এই মেশিনেও শুধুমাত্র কাগজের রিল লাগিয়ে দিলে পেপার কাটিং ও পেস্টিং হয়ে সম্পূর্ণ ব্যাগ তৈরি হয়ে যাবে। একজন কর্মীই পুরাে কাজটা পরিচালনা করতে পারেন। জায়গাও লাগে খুব কম। নন-ওভেন ও কাগজের ব্যাগ তৈরির মেশিন বসানাের জন্য প্রয়ােজন অন্তত ২০ ফুট X ২০ ফুট মাপের একটি ঘর।
মেশিন কোথায় পাবেন:
ভারত মেশিন টুলস ইন্ডাস্ট্রি, ৬১, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, কলকাতা-৭০০ ০১৩, ফোন: (০৩৩) ২২৩৬ ৮০১৫, ৯৪৩২৪-২২০৮৬। ই-মেল: bharatmachinetools 1 @rediffmail.com
ব্যবসা করার আগে বাজার-সমীক্ষা করাটা জরুরি:-
(তাপস বসু, কর্ণধর, ভারত মেশিন টুলস ইন্ডাষ্ট্রি)
আমরা শুধু নন-ওভেন ও কাগজের ব্যাগ তৈরির মেশিন বিক্রি করি না, বিনামূল্যে ক্রেতার ব্যবসাকেন্দ্রে মেশিন ইনস্টল করি এবং কর্মীদের ট্রেনিং দেওয়ার জন্যও লােক পাঠাই। পাঁচ দিন ক্রেতার ব্যবসাকেন্দ্রে থেকে ট্রেনিং দেওয়া হয়। দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যে-কোনও ব্যবস্ম করার আগে মার্কেট-সার্ভে করাটা জরুরি। বাজারে জিনিসটির চাহিদা কত, কারা জিনিসটির ক্রেতা হতে পারে সেটা আগে সার্ভে করে দেখতে হবে। এরপর বিভিন্ন দোকান, অফিস বা কোম্পানিতে গিয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে উৎপাদন সম্পর্কে জানাতে হবে। যেসব দোকান এখনও প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করছে, তাদের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে নিজের উৎপাদিত ননওভেন ব্যাগ ও কাগজের ব্যাগ ব্যবহারের সুবিধা ও পরিবেশগত উপকারিতার কথা বুঝিয়ে সেগুলি বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। যাদের সঙ্গে কথা বলবেন, তাঁদের ভিজিটিং কার্ড নেবেন। তবে, প্রথম দিকে তৈরি ব্যাগের দাম যদি কিছুটা কম রাখতে পারেন তাহলে ভালাে হয়।
আমাদের সংস্থার অটোমেটিক নন-ওভেন কাপড়ের ব্যাগ তৈরির মেশিনের দাম পড়বে প্রায় বারাে লক্ষ টাকা। কাগজের ব্যাগ তৈরির মেশিনের দাম ছয় লক্ষ টাকা। এক বছরের ওয়ারেন্টি থাকে। বিনামূল্যে ক্রেতার ব্যবসাকেন্দ্রে মেশিন ইনস্টল করে দেওয়া এবং কর্মীদের ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থাও করে ভারত মেশিন টুলস ইন্ডাষ্ট্রি।
বিশেষ অফার: কর্মক্ষেত্র'য় প্রকাশিত কুপনটি সঙ্গে আনলে নন-ওভেন ব্যাগ ও পেপার ব্যাগ তৈরির মেশিনের ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার টাকা ছাড় দেওয়া হবে।
Tags:- non woven bags,non woven bags manufacturer,non woven bags machine price,non woven fabric bags,non woven fabric,non woven fabric manufacturer,non woven fabric manufacturer in india,non woven bag making machine,non woven bag making machine project report,manufacturing of non woven bags,fully automatic non woven bag making machine,carry bag making machine,paper bag making machine price list,paper bag making business,non woven bags machine,bright future business